সুন্দরবনের জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ, বন্যপ্রাণী সংক্রান্ত অপরাধ এবং বাণিজ্যের উপর জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব


সুন্দরবনের জীববৈচিত্র্য রক্ষা, বন্যপ্রাণী সংক্রান্ত অপরাধ এবং বাণিজ্যের উপর জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব বিশ্লেষণপূর্বক একটি সিরিজে প্রতিবেদনের প্রেক্ষাপট প্রকাশিত হল।

বাংলাদেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলীয় উপকূলীয় অঞ্চলের প্রায় ৫০ লক্ষ মানুষ জীবিকা নির্বাহের জন্য সুন্দরবনের উপর নির্ভরশীল। এটি রয়েল বেঙ্গল টাইগারসহ বিভিন্ন বন্যপ্রাণীর আবাস। অনন্য প্রধান প্রজাতি হিসাবে রয়েল বেঙ্গল টাইগার সুন্দরবনের জীববৈচিত্র্য রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।



তবে, অবৈধ শিকার এবং বন্যপ্রাণীর বাণিজ্য সুন্দরবনে বাঘের সংখ্যা কমে যাওয়ার প্রধান কারণ। বিভিন্ন রিপোর্টের তথ্য অনুসারে, ৩০ টিরও বেশি জলদস্যু এবং শিকারিচক্র সুন্দরবনে বাঘ হত্যা এবং বনজ ও প্রাকৃতিক সম্পদ আহরণে সক্রিয় রয়েছে।

সুন্দরবনের ববৈচিত্র্য এবং প্রাকৃতিক সম্পদ সুরক্ষার দায়িত্বে রয়েছে বন বিভাগ। সুন্দরবন রক্ষায় বন বিভাগের নিজস্ব লজিস্টিক্যাল ব্যবস্থাপনা চাহিদার তুলনায় ন্যূনতম। তা সত্ত্বেও বন বিভাগ সুন্দরবনের টহল নিরীক্ষণ ব্যবস্থাপনাটিকে অগ্রাধিকার দিয়ে থাকে।

জাতীয় উদ্যান আইন সুন্দরবনের প্রাকৃতিক সম্পদ আহরণ নিয়ন্ত্রণ করে। এছাড়া প্রাকৃতিক দুর্যোগ এবং জলোচ্ছ্বাসের প্রকৃতি জন্য বঙ্গোপসাগর সংলগ্ন সুন্দরবন বরাবরই বন্য প্রাণী এবং জলদস্যু কার্যকলাপের জন্য বিপজ্জনক। অধিকন্তু, হরিণে মাংস, চামড়া, দাঁত এবং অন্যান্য হাড় নিয়ে হরহামেশাই বাণিজ্য হচ্ছে। বন্যপ্রাণীর এমন অবৈধ বাণিজ্যের প্রতিকার প্রয়োজন।

এছাড়াও জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে সুন্দরবন বেশ চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন। সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধি, ক্রমবর্ধমান লবণাক্ততা ম্যানগ্রোভ বনের স্বাস্থ্য, কৃষিকাজ এবং ফসলের গুণগত মানকে মারাত্মকভাবে হুমকির মধ্যে ফেলেছে।

জলবায়ু পরিবর্তন ইতোমধ্যে সুন্দরবনের জীববৈচিত্র্য এবং স্থানীয় মানুষের জীবনযাত্রাকে বদলেছে। পরিবর্তনশীল জলবায়ুর ফলস্বরূপ বন এবং সুন্দরবন উপকূলীয় অঞ্চলের কৃষি ব্যবস্থা ক্রমবর্ধমান রোগ এবং কীটপতঙ্গের প্রাদুর্ভাবে ঝুঁকিপূর্ণ। আয়ের সন্ধানে স্থানীয়রা অনেকেই বন্যপ্রাণী শিকার, ক্রয়-বিক্রয়ে নিজেকে জড়িয়েছেন।

একটি রিসার্চ টিম সুন্দরবনের এই সকল প্রতিকূলতা, জীববৈচিত্র্যের উপর জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করবে। এছাড়া পরিবর্তনশীল জলবায়ুর প্রভাবে স্থানীয় মানুষের আয়ে কি পরিবর্তন হয়েছে তার উপর প্রতিবেদন হবে।

এই রিসার্চ বর্তমানে সুন্দরবনের জীববৈচিত্র্য, বন্যপ্রাণী সংক্রান্ত অপরাধ এবং বাণিজ্যকে জলবায়ু পরিবর্তন কিভাবে প্রভাবিত করছে তা জানার চেষ্টা করবে।

এই প্রকল্পটি ক্লাইমেট ট্র্যাকারের দক্ষিণ এশিয়া ফেলো জুলকার নাঈন এবং আনন্দ টিভির বিশেষ সংবাদ প্রতিবেদক মাহফুজুর রহমানের একটি যৌথ প্রকল্প।

জুলকার নাঈন সম্পর্কিত তথ্য

জুলকার নাঈন মূলত পরিবর্তনশীল জলবায়ুর প্রভাবে খাদ্য নিরাপত্তা, প্রাকৃতিক দুর্যোগ এবং অভিবাসনের উপর গবেষণামূলক রিপোর্ট করেন। জুলকার মূলত জলবায়ু পরিবর্তন নিয়ে কাজ করেন। 

তিনি ক্লাইমেট ট্র্যাকারের সাথে জলবায়ু পরিবর্তন, নারীর সক্ষমতা অর্জন এবং ক্লাইমেট ফাইন্যান্স অগ্রাধিকার জন্য রিপোর্টের অভিজ্ঞতা রয়েছে।

তিনি ক্লাইমেট ট্র্যাকার দক্ষিণ এশিয়া নেটওয়ার্কের সঙ্গে জড়িত। এই নেটওয়ার্ক যুবকদের পরিবেশ এবং জলবায়ু বিষয়ক রিপোর্ট প্রকাশে সহয়তা করে।

তিনি ক্লাইমেট ট্র্যাকারের একজন দক্ষিণ এশিয়া ফেলো এবং একজন ট্রেইন দ্যা ট্রেইনার সার্টিফাইড সাংবাদিক যিনি জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক সাংবাদিকতায় বিশেষ পারদর্শী।

জুলকার নাঈন ক্লাইমেট ট্র্যাকার কর্মীদের সহায়তায় জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক কোর্স তৈরি করেছেন। 

একজন তরুণ ক্লাইমেট এডভোকেট হিসাবে জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক শিক্ষা তরুন্দের মাঝে পৌঁছে দেয়াই তাঁর উদ্দেশ্য।

মাহফুজুর রহমান সম্পর্কিত তথ্য

মাহফুজুর রহমান একাধারে আনন্দ টিভি এবং মিলেনিয়াম টিভি মার্কিন ইউএসের একজন বিশেষ সংবাদদাতা। তাঁর সুন্দরবন ইস্যু এবং স্থানীয় সাংবাদিকতার অভিজ্ঞতা রয়েছে।

তাঁর সুন্দরবন এবং বাংলাদেশের উপকূলীয় অঞ্চলের প্রাকৃতিক দুর্যোগের উপর রিপোর্টের অভিজ্ঞতা রয়েছে। মাহফুজ রহমানের সুন্দরবনের স্থানীয় পেশাজীবীর মানুষ নিয়ে কাজের অভিজ্ঞতা রয়েছে। স্থানীয় প্রতিনিধি হিসাবে তিনি জলবায়ু এবং পরিবেশ বিষয়ক প্রতিবেদন বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রচার হয়েছে।

তিনি জুলকার নাঈনের সাথে সুন্দরবন এবং জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক একটি গবেষণামূলক প্রকল্পে সম্পৃক্ত হয়েছেন।

Comments

Popular posts from this blog

Servo Lubricants In Bangladesh